চ্যাটজিপিটি নিয়ে উদ্বেগে গুগল, আনছে নিজস্ব চ্যাটবট

 





গত নভেম্বরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত (এআই) চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’ নিয়ে আসে ওপেনএআই। মাত্র ২ মাসেই ১০ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী যুক্ত হয় প্ল্যাটফর্মটিতে। চ্যাটজিপিটি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিল গুগল বেশ আগেই। এবার এই চ্যাটবটের সঙ্গে পাল্লা দিতে এআইভিত্তিক চ্যাটবট নিয়ে আসছে টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি। 


দ্য ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পূর্বনির্ধারিত একটি অনুষ্ঠানে গুগল নিজেদের এই চ্যাটবট উন্মোচন করবে। অনুষ্ঠানটির শিরোনাম ‘গুগল প্রেজেন্টস: লাইভ ফ্রম প্যারিস’। ৪০ মিনিটের ওই অনুষ্ঠান ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।


গত বছরের শেষ দিকে গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই নিজেদের গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত চ্যাটবট আনার পরিকল্পনার কথা জানান। সুন্দর পিচাই জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের (২০২২) শুরু থেকেই গুগলের নিজস্ব এআইভিত্তিক চ্যাটবট নিয়ে কাজ করা চলছে। 


প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য গুগলের প্রথম এআই চ্যাটবট হতে পারে ‘এলএএমডিএ’ বা ‘ল্যামডা’। এলএএমডিএ হলো মানুষের সঙ্গে সংলাপে সক্ষম গুগলের একটি এআই মডেল। এটি এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে শুধু গুগলের প্রকৌশলী ও পরীক্ষকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। 


দ্য ভার্জের আরেক প্রতিবেদনে জানা যায়, ওপেনএআই–এর প্রাক্তন কর্মীদের দিয়ে প্রতিষ্ঠিত নতুন কোম্পানি অ্যানথ্রোপিক–এ বিনিয়োগ করেছে গুগল। ২০২২ সালের শেষ দিকে স্টার্টআপটিতে প্রায় ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে গুগল। এর মাধ্যমে গুগল অ্যানথ্রোপিকের ১০ শতাংশ অংশীদারত্ব রয়েছে।


সম্প্রতি, লেখা থেকে গান বানিয়ে দেয়—এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল তৈরি করেছে গুগল। এই মডেলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিউজিক এলএম’। এটি যেকোনো ঘরানার গান তৈরি করতে সক্ষম। ব্যবহারকারীকে শুধু লিখে দিতে হবে কোন ধরনের গান তিনি চাইছেন। মিউজিক এলএমের ডেটাবেসে ২ লাখ ৮০ ঘণ্টার গান রয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়েই গান তৈরি করবে মিউজিক এলএম।


প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব ধাঁচের গান বানানোর পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্রের ঝঙ্কার জুড়ে দেওয়ার কাজটিও করতে সক্ষম এই এআই। বিভিন্ন ধাঁচের গান তৈরি করতে পারলেও মিউজিক এলএমের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই এআই–এর কিছু গানের কম্পোজিশন বড়ই অদ্ভুত। এ ছাড়া, গানগুলোতে ব্যবহৃত কণ্ঠও স্পষ্ট শোনা যায় না। 


এখনই মিউজিক এলএম সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল কর্তৃপক্ষ। এই এআই প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত গানগুলোর অন্তত ১ শতাংশ গান নকল করে শোনাচ্ছে মিউজিক এলএম। ফলে কপিরাইট বিষয়ক জটিলতা এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল। 


এটিই প্রথম এআই মিউজিক জেনারেটর নয়। এর আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে গান তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছিল গুগল। তবে কারিগরি ত্রুটি ও প্রশিক্ষণের জন্য ডেটা সীমাবদ্ধ থাকায় আলোর মুখ দেখেনি প্রকল্পটি।

Comments